Logo
×

Follow Us

ইউরোপ

দ্য হেগে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি আজ

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৩৩

দ্য হেগে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি আজ

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) করা মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর)। 

এই মামলা মিয়ানমারকে এই প্রথম বৈশ্বিক পরিসরে চাপে ফেলেছে। এই আদালতের যেকোনো রায়ই চূড়ান্ত, বাধ্যবাধকতাপূর্ণ ও অবশ্যপালনীয়। চূড়ান্ত রায়ের পর আপিলের কোনো সুযোগ নেই।

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আইসিজের নবনিযুক্ত রেজিস্ট্রার ফিলিপ গটিয়ার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আইসিজেতে নিযুক্ত হওয়ার আগে সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার অভিযোগে  ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে গাম্বিয়া গত ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এতে অবিলম্বে মিয়ানমারের গণহত্যা বন্ধে জরুরি হস্তক্ষেপের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলার শুনানিতে মিয়ানমার যাতে মিথ্যা তথ্য দিতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার বাদী গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

আইসিজেতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলার শুনানিতে বাদী গাম্বিয়াকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। এই দলে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের তিনজন প্রতিনিধিও রয়েছেন।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কানাডা এবং নেদারল্যান্ডসও সেই শুনানিতে গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করবে। আজ মঙ্গলবার তিনদিনের এই শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

মিয়ানমারের পক্ষে এই শুনানির জন্য দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি নিজেই দ্য হেগে গেছেন।

একাধিক রোহিঙ্গা সার্ভাইভার গ্রুপের পাশাপাশি মিয়ানমারের সরকারি সমর্থকরা শুনানিকালে এই ডাচ সিটিতে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরিকল্পনা করেছে। এদিকে একাধিক মানবাধিকার গ্রুপ শুনানির একদিন আগে সোমবার মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে।

সামরিক বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে সাত লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। একে জাতিসংঘ জাতিগত নিধন হিসেবে বর্ণনা করেছে। অবশ্য নেপিডো এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার প্রেক্ষিতে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের কয়েক শ’ গ্রামে সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে।

জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালত আইসিজে ‘ওয়ার্ল্ড কোর্ট’ নামেও পরিচিত। নেদারল্যান্ডসের শহর দ্য হেগে এই আদালত অবস্থিত। আইসিজে ১৫ জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত, যাদের প্রায় কাছাকাছি সময়ে নিরাপত্তা পরিষদ বা সাধারণ পরিষদ নির্বাচিত করে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের লোকেদের বিচারক হিসেবে নির্বাচন করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় কিছু আইনি বৈধতার বিষয় রয়েছে, এখন পর্যন্ত যা সুপরিকল্পিত একটি ব্যবস্থা হিসেবে প্রমাণিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলেছেন, আদালতে রোহিঙ্গাদের আসার প্রেক্ষাপট নিয়েই বেশি বিতর্ক হতে পারে, সে ব্যাপারে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বক্তব্য এবং তথ্য প্রমাণ প্রস্তুত রেখেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত এ সর্ম্পকিত কমিশনের রিপোর্টসহ সংশ্লিষ্ট সব ডকুমেন্ট গাম্বিয়াকে সরবরাহ করবে বাংলাদেশ।

তারা বলেছেন, বাংলাদেশ কৌশল হিসেবে ইসলামী দেশগুলোর জোটে সিদ্ধান্ত নিয়ে গাম্বিয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আদালতের আশ্রয় নিয়েছে। এই আদালতে শুনানিতে বাংলাদেশের সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। সেজন্য বাংলাদেশ তথ্য উপাত্ত নিয়ে উপস্থিত থেকে শুনানিতে গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫